উজিপুরের শাপলার বিলে এখন পর্যাটকের ভির।

মোঃ সিরাজুল হক রাজু
স্টাফ রিপোর্টার।

শীত পুরোপুরি না এলেও শীতের সৌন্দর্য্য জানান দিতে শুরু করেছে বরিশালের শাপলা বিল।প্রায় ১০ হাজার একর জমির পুরো বিল জুড়ে কেবল লাল শাপলার সমারোহ দেখে যে কারো মনে হতেই পারে এ যেন প্রকৃতির বুকে আঁকা এক নকশি কাঁথা। পর্যটকরাও ভিড় করছে এ বিলে। আর শাপলা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন অনেকে।লাল আর সবুজের সমারোহ দূর থেকেই চোখে পড়ে। কাছে গেলেই সবুজের পটভূমিতে লালের অস্তিত্ব আরো গাঢ় হয়ে ধরা দেয়।

 

 

চোখ জুড়িয়ে যায় জাতীয় ফুল শাপলার বাহারি সৌন্দর্য্যে। সূর্যের সোনালি আভা শাপলা পাতার ফাঁকে ফাঁকে পানিতে প্রতিফলিত হয়ে বিলের সৌন্দর্য্য আরো কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।বরিশালের আগৈলঝারা ও উজিরপুর উপজেলার বিলগুলো এখন শাপলার রাজ্য হিসেবেই বেশি পরিচিত। এ দুই উপজেলার প্রায় দুই হাজার পাঁচশ’ হেক্টর জমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মেছে শাপলা। পর্যটকদের বিনোদনের পাশাপাশি, অনেকে শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।প্রায় দু’শত বছর ধরে সাতলার বিলগুলোতে শাপলা জন্ম হচ্ছে। ওই এলাকার প্রায় ৫০ ভাগ অদিবাসী শাপলার চাষ ও বিপণন কাজের সাথে জড়িত রয়েছে। স্থানীয়রা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার্থে সাতলা এলাকায় আবাসন ব্যবস্থা ও পর্যটন কেন্দ্র করার দাবি জানিয়েছেন। সরকার এ শাপলা বিলকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে।

 

 

সাতলার শাপলা বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের জন্য কালবিলা এলাকায় একটি ছোট্ট পরিসরে আবাসন নির্মানের স্থান নির্ধারনসহ প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাতলা বিল দিনে দিনে পর্যটন এলাকায় পরিণত হওয়ায় সাতলার এ শাপলা বিলকে পরিপূর্ণতায় রূপ দিতে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এক সময় শাপলার তেমন কোন চাহিদা না থাকায় পানিতে জন্মে পানিতেই মরে পচে যেতো। দিনে দিনে শাপলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বাজারে বিক্রি করতে শুরু করে দিনমজুররা। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই শাপলা পাওয়া যায়।

 

 

বিশেষ করে এ অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের তালিকায় শাপলাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। সাতলার বুকজুড়ে শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য শিশু-নারী-পুরুষ সহ সব শ্রেণি-পেশার না বয়সের মানুষ ভিড় করছে। শাপলা তোলার কাজে জড়িত দিনমজুর সোহরাব হোসেন জানান শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে চলছে তার সংসার। প্রতিদিন ৩/৪ শত টাকা আয় হয় তাদের । এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে নানা সামগ্রী বিক্রী করে সে আর্থিক লাভবান হচ্ছেন।বরিশাল শহর থেকে আসা পর্যটক ফটোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম রাজু জানান তিনি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং এই অপরূপ সৌন্দর্যের বিশেষ কিছু ছবি তোলার জন্য ছুটে এসেছেন। শাপলা বিলের সৌন্দর্য অবগাহনে তিনি পুলকিত ও মুগ্ধ।

 

 

২০১৮ সালে তৎকালীন বরিশাল জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান সাতলার এ শাপলা বিলের অপার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে এখানে পর্যটন কেন্দ্র করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম বলেন পর্যটকরা যাতে প্রকৃতির এ অপরূপ অপার সৌন্দর্যকে অবলিলায় অবগাহন করে দেহ-মনে প্রশান্তি পেতে পারে সেজন্য সাতলার এ শাপলা বিলাঞ্চলকে পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *