স্বামী কে টাকার হিসাব দিতে হয় কনডম গুনে যৌনকর্মী।

আবু ইউসুফ বিশেষ প্রতিনিধি ঢাকা ফার্মগেট। স্বামী কে টাকার হিসাব দিতে হয় কনডম গুনে গুনে। প্রতি রাতে স্বামী কনডম গুনে গুনে হাতে ধরিয়ে দেয় স্বামীর দেয়া কনডম নিয়েই রাস্তায় দাঁড়াই তার হিসাব এখানেই এক কনডম এক খদ্দের আর এক খদ্দের একশ টাকা ভোরে যখন বাসায় যাই তখন ফের কডমের হিসাব নেয় রাতে দশটি কনডমের ব্যবহার হলে স্বামী কে এক হাজার টাকা গুনে দিতে হয়।

এক টাকা কম হলে রক্ষা নেই যৌনকর্মী সীমার জীবন খাতার হিসাব এটি বয়স (৩৩)এর ঘরে তবে নিজ হিসাব মেলাতে পারিনি একটি দিনের জন্যও রাতের বেলায় প্রায় প্রকাশ্যে যৌন পেশায় লিপ্ত হয়ে গতর খাটা আয়েও অধিকার নেই সীমার যেন জীবনের ঘানি টানতেই তার জন্ম আর সে জীবনের স্বাদ তার কাছে বরাবরই ফ্যাকাশে।

ফার্মগেট চন্দ্রিমা উদ্যান আর বিজয় সরণি এলাকায় রাতে যেসব ভাসমান যৌন কর্মীদের দেখা মেলে সীমা তাদের মধ্যে অতিপরিচিত সিগারেটে আসক্তি থাকলেও অন্য নেশায় টান নেই এই নারীর মূলত খদ্দের টানতেই নেশার ঘোরে শরীরের গাঁথুনি নষ্ট করতে চাননি তিনি ঝটপটে চঞ্চল ঠিক যেন হরিণের মতো এ পাড়ায় সকল খদ্দের তার চেনা প্রায় সীমা দাঁড়ালে অন্যের ভাগে খদ্দের মেলা ভার।

এ দিনেও কথা বলার সময় ছিল না তার গাছের গোড়ায় কাপড় টেনে ঘর বানিয়ে একের পর এক খদ্দের টানছেন সেখানে কিন্তু অবেলায় বৃষ্টি বাগড়া বাধায় মধ্যরাতে খানিক বৃষ্টি হয়ে ছুট দেয় বটে তবে খদ্দেরের আনাগোনা কমে গেছে ওটুকু বৃষ্টিতেই বৃষ্টির কারণেই অলস সময় কাটছিল রনি তানিয়া আর সীমার।

খুলনার তালুকদার বংশের মেয়ে সীমার শৈশব কেটেছে সুখের আদলে কিন্তু ডানপিটে স্বভাবের হওয়ায় সে সুখে স্থির হওয়া হয়নি পড়ালেখায় ইতি টেনে মনের খেয়ালে শৈশবে একবার চলে যায় সিলেট হযরত শাহজালাল এর মাজারে সেখানে কয়েক দিন কাটিয়ে ট্রেনে করে চলে আসে কমলাপুর স্টেশনে।

(২০০১) সালের কথা আর এখানেই নিভতে শুরু করে জীবনের স্বপ্নময় আলো স্টেশনেই পরিচয় হয় এক ভাসমান যৌনকর্মীর সঙ্গে সে সীমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায় জোর করে ওই নারী তার স্বামীর বিছানায় শুইতে দেয় সীমাকে কিশোরী সীমার সঙ্গে রাতভর চলে ধস্তাধস্তি তবুও যৌন কাজে বাধ্য করাতে পারে না বলছিলেন সীমা।

পরের দিন এক দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয় দালাল নিয়ে যায় পল্টনের এক আবাসিক হোটেলে বাধ্য করায় যৌন পেশায় এরপর আবারও বিক্রি বাড়ির সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ সময় এরপর আরেক হোটেলে বিক্রি অন্ধকার জীবনের এ গলি থেকে ও গলি কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হয় না হোটেলেই এক খদ্দেরের সঙ্গে পরিচয় পরিচয় থেকেই দিনে দিনে প্রেম জমে ওঠে প্রেমিকের হাত ধরেই হোটেল থেকে মুক্তি কিন্তু নিষিদ্ধ পাড়া থেকে আর মুক্তি মেলে না স্ত্রী হিসেবে ঘরে এনে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন বিয়ের মাস খানিক পর দেহ ব্যবসার জন্যই নারায়ণগঞ্জ বাসা নেয়া হয় সে বাড়িতে শ্বশুর শাশুড়িও অবস্থান করতেন তারা ও বাধ্য করত এ পেশায়

বছর দুই পর ভাটা পড়ে নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে সীমার দেহ ব্যবসায় স্বামী নিয়ে আসে ঢাকার তেজগাঁওয়ে ঘটনার সময় আর স্থান বদলায় বারবার কিন্তু সীমার জীবনের রঙ বদলায় না আর তবে এবার আর ঘরে নয় সীমার দেহ ব্যবসার জন্য ঠাঁই হয় উন্মুক্ত জায়গা আর আবাসিক হোটেলে ঠাঁই মেলেনি তার (১৭) বছরের যৌন পেশার (১৪) বছরই কেটেছে ফার্মগেট পার্ক বিজয় সরণি আর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিয়ের পর খুলনায় বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন দুবার কিন্তু স্বামী নিজেই গিয়ে বদনাম ছড়িয়ে দিয়েছে সীমার গ্রামে আর থাকা হয়নি বাবার বাড়ি ঢাকায় ফিরে ফের স্বামীর হাত ধরেই যৌন পেশায় এর মধ্যে এক ছেলে এক মেয়ে ও জন্ম নেয় তার ঘরে নেশায় আসক্ত স্বামীর আয়ের উৎস স্ত্রী সীমার দেহটিই।

এখন দিনের আলো খুব কম দেখা মেলে সীমার সারা রাত গতর খেটে ঘুমান দিনভর ছেলে মেয়ে জানে তাদের মা একটি হাসপাতালে কাজ করেন সন্তানদের পড়ালেখা বাড়ি ভাড়া সংসার আর স্বামীর নেশার টাকার সবই আসে সীমার দেহব্যবসা থেকে রাতে রাস্তার পাশেই এক খদ্দেরের হাত থেকে আরেক খদ্দেরের হাত পড়ে সীমা কিন্তু নিয়ন্ত্রণ থাকে স্বামীর হাতেই।

সীমা বলেন অনেকবার চেষ্টা করেছি স্বামী কে ছেড়ে দেয়ার ও আমার জীবনের অভিশাপ বাবা মায়ের মুখও দেখতে পারি না ভোরে গিয়ে টাকা হাতে না দিতে পারলে মারপিট করে পালিয়ে থেকেও রক্ষা পাইনি সব নেশাই করে এখন সে মরলেই বাঁচি সন্তান নিয়ে দেশে চইলা যামু।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *