ঝিনাইদহে নির্মানে দুর্নীতি ভেকু দিয়ে তুলে ফেলা হলো ১৯ কোটি টাকা রাস্তার কার্পেটিং

মোঃ আনোয়ার হোসেন, ঝিনাইদহঃ
১৯ কোটি টাকার কার্পেটিং করা রাস্তার দুর্নীতি আর অনিয়ম ঢাকতে বুধবার ভেকু মেশিন দিয়ে তুলে ফেলা হয়েছে। সকাল থেকেই ঠিকাদারের লোকজন কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার কার্পেটিং করা রাস্তা তুলে নিয়ে যায়। এদিকে নির্মাণের সাত দিনের মাথায় উঠে যাওয়া পিচের রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল। এ দলের নেতৃত্ব দেন যশোরের উপ-পরিচালক নাজমুস সাদাত। “ঝিনাইদহে নির্মাণের সাত দিনেই উঠে গেল ১৯ কোটি টাকার রাস্তার কার্পেটিং” শিরোনামে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মঙ্গলবার বিকালেই দুদকের যশোর কার্যালয়ের একটি টিম ঘটস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় দুদক কর্মকর্তারা জানান, দেখে বোঝা যাচ্ছে কাজটি নিম্নমানের হয়েছে। দুদক উপ-পরিচালক নাজমুস সায়াদাত গনমাধ্যমকর্মীদের আশ্বস্ত করেন রাস্তার কাজে যারা দূর্নীতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। এদিকে বুধবার সকাল থেকে সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের রাস্তার কার্পেটিং ভেকু মেশিন দিয়ে উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। দূনীতি ঢাকতেই ঠিকাদার তড়িঘড়ি করেই সদ্য দেওয়া পিচের কার্পেটিং তুলছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি, ভেকু দিয়ে কার্পেটিং উঠানোই প্রমান করে কাজে ব্যপক দূর্নীতি হয়েছে। যদিও কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুমের দাবি, রাস্তার কাজে কোন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়নি। বৃষ্টির কারণে এমনটি হয়েছে। সওজের একটি সুত্র জানায়, মিজানুর রহমান মাসুম যে কাজটিই করেন, তার স্থায়িত্ব হয় না। কালীগঞ্জের বেজপাড়া এলাকার ৫ কোটি টাকার রাস্তা দুই বছর আগে তিনি করেন। এক মাসের মাথায় উঠে যায়। এ নিয়ে তখন কম হৈ চৈ হয়নি। সওজ বিভাগের কর্মকর্তারা ঠিকাদারকের এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ডাকবাংলা ত্রীমোহনী পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতিসহ ওয়ারিং এর কাজ চলছে তিন বছর ধরে। এক সপ্তাহ আগে কালীগঞ্জ নীমতলা বাস স্টান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিং করা হয়। ৪ থেকে ৫ দিনে তিন কিলোমিটর কাজ সম্পন্ন করে। এরপর বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখেন। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে গেছে। কোথাও বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়। কাজের মুল ঠিকাদার খুলনার মুজাহার ইন্টার প্রাইজ। কিন্তু হাত বদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। সড়কটির কাজ দেখাশোনার দ্বায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারনে এমটি হয়েছে। তবে সিডিউল অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার তিন বছরের মধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুন:মেরামত করবেন বলে চুক্তি আছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *