দেখুন বিএনপি ক্ষমতায় থাকা কালীন ভারতের সঙ্গে কি কি চুক্তি করেছিলেন।

আবু ইউসুফ নিজস্ব নিউজ রুম।

বিএনপি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শে একটা চুক্তি সই করে। এই চুক্তিতে ছিল কী? তারা বাংলাদেশে পাটকলগুলো একে একে বন্ধ করে দেবে। ঠিক একই সময় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করে, ভারতকে তারা টাকা দেবে নতুন নতুন পাটকল তৈরি করার জন্য।

পার্লামেন্টে শেখ হাসিনা এবং অনেকে এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন যে আড়াই লাখ বেল পাট রপ্তানির মার্কেট যদি বিদেশে থেকে থাকে, তাহলে বাংলাদেশের পাটকল কেন বন্ধ হবে? আর ভারত কেন নতুন পাটকল করার সুযোগ পাবে?’ বিএনপিকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও বলেছিলাম, আমাদের তো সব সময় ভারতের দালাল বলেন।

কিন্তু এই দালালির যে একটা জ্বলন্ত উদাহরণ সামনে, এটার কী করবেন? তাদের কোনো জবাব ছিল না। কারণ তাদের ওই একটাই, টাকা পাবে আর ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যা বলেছে, মনে হয় ফেরেশতা এসে কথা বলেছে। যা বলেছে সেটা করতে হবে। এভাবে তারা আমাদের পাট কলগুলো একে একে ধ্বংস করে দেয়। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারের উদ্যোগের ফলে আপনারা দেখেন, পাটের সোনালি দিন আবার ফিরে এসেছে। পাট হচ্ছে একটি কৃষিপণ্য, এর সঙ্গে আমার হাজার হাজার কৃষকের জীবন জড়িত এবং জমিতে পাট চাষ হয়, তা প্রাকৃতিকভাবেই শস্যবর্তনের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়।

কাজেই আমাদের পাটের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা বন্ধ থাকা খুলনার খালিশপুর জুটমিল, সিরাজগঞ্জের কওমী জুটমিলসহ পাঁচটি পাটকল ও দুটি বস্ত্রকল চালু করেছি। এতে প্রায় ২১ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এসব পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে।

’ তিনি বলেন, তাঁর সরকার পাটপণ্য গবেষণায় গুরুত্ব দেয় বলেই আজ পাট থেকে প্রায় ৩৫ রকম পণ্য উৎপাদন করা যাচ্ছে। এমনকি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব পাটের পলিথিন ব্যাগও তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞানী মরহুম ড. মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে পাটের জিনরহস্য উদ্ভাবন করা হয়েছে। ফলে পাটের উন্নত চাষাবাদের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পাটের মেধাস্বত্ব অধিকার অর্জন করেছি। এখন থেকে পাট আমাদের নিজস্ব পণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ’

যেই বিজেপির নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসলেন এমনি ডিগবাজ মেরে নির্লজ্জের মত বিনা আমন্ত্রণে পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুশি করার জন্য তাঁদের সাথে হোটেলের লবিতে গিয়ে দেখা করলেন। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে বাজারের ফর্দ হাতে নিয়ে অভিযোগ করলেন, আওয়ামীলীগ ভারতীয় কংগ্রেসের ঘনিষ্ট। এই সব অভিযোগকে পাত্তা দেননি সুষমা স্বরাজ ও নরেন্দ্র মোদী।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী, সাম্প্রদায়িক দলকে তৈলমর্দন কারী স্বশিক্ষিত নেত্রী ও নেতা কর্মীরা আওয়ামীলীগের ভারত প্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখে নেবেন। আয়নায় চেহারা দেখতে কষ্ট হলে ছবি গুলা দেখে নিবেন।

ভারত সফরের ঠিক আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও বললেন, প্রতিবেশী দেশটির কাছে গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জিততে দেয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২০০১ সালের ওই নির্বাচনে জিতে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার পটভূমি তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এল।

আর সেই ক্ষমতায় আসার পেছনে বেশ ভাল একটা চুক্তি ছিল- বাংলাদেশের সম্পদ গ্যাস। এই সম্পদ গ্যাস বিক্রি করতে চাইল আমেরিকা, কিনবে ভারত; আমেরিকান কোম্পানি গ্যাস তুলবে, ভারতের কাছে বিক্রি করবে।’

ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ গোপনে বিড়লা, টাটা, আম্মানীদের মতো ভারতের বিগ বিজনেসের কাছে বিকিয়ে দেয়ার চুক্তি কি করেনি হাওয়া ভবন? আওয়ামী লীগের চাইতে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও ফারাক্কা বাঁধ সমস্যা সমাধান করে ভারতের কাছ থেকে এক ফোঁটা পানি আনতে পারেনি বিএনপি সরকার।

শেখ হাসিনা প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসেই দিল্লীর সঙ্গে ত্রিশ বছর মেয়াদী পানি চুক্তি করতে সক্ষম হন। পার্বত্য এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেনি অথবা চায়নি বিএনপি। হাসিনা ক্ষমতায় এসেই এই রক্তক্ষয় বন্ধ করার লক্ষ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদনে সাফল্য দেখান। এমনকি বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক অসমতা কমিয়ে আনার পথে সকল পদক্ষেপ রাখেন।

এ জন্যেই জ্ঞানপাপী বি এন পি দের বলি, ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ের ব্যাপারে আপনারা যা পারেননি, আওয়ামী লীগ সরকার তা পেরেছে। ভবিষ্যতেও পারবে। আপনারা অসত্য প্রচার না চালিয়ে একটু ধৈর্য ধরুন, দেখবেন অতীতের ফারাক্কা চুক্তির মতো বর্তমান হাসিনা সরকার ট্রানজিট, চট্টগ্রাম বন্দর, টিপাই মুখ বাঁধের সমস্যায় দিল্লীর সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশের স্বার্থ ও সম্মান রক্ষা করেই চুক্তি সম্পাদন করতে পারবেন। আপনারা দয়া করে মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের মতো বাঘ বাঘ চিৎকার জুড়ে দেশের স্বার্থ ও মর্যাদার হানি ঘটাবেন না।‌

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *