বরিশালে যৌতুকের জন্য অন্ত সত্তা স্ত্রীকে হত্যা।

মোঃ সিরাজুল হক রাজু স্টাফ রিপোর্টার।

বরিশালের বানারীপাড়ায় যৌতুকের দাবীতে অনিমা (২৮) নামের অন্তঃস্বত্ত্বা এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার পরে লাশ গুমের চেষ্টাকালে স্বামী,ভাসুর ও জা’কে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।

এ ঘটনায় ২৫ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নিহত ওই গৃহবধুর ভাই গোপাল হালদার বাদী হয়ে ওই তিনজনকে সুনির্দিষ্ট ও ২জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে বানারীপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামী নরেন জয়ধর (৩৬),তার ভাই নারায়ণ জয়ধর (৪২) ও বৌদি (ভাইয়ের স্ত্রী) কবিতা(৩৫)কে বরিশালে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের মরিচবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত মতিলাল হালদারের মেয়ে অনিমার সঙ্গে বিশারকান্দি গ্রামের বৈকুন্ঠ জয়ধরের ছেলে নরেন জয়ধরের সঙ্গে হিন্দু প্রথা অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরকে স্বর্নালঙ্কার,আসবাবপত্র ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র সহ প্রায় দেড় লাখ টাকার মালপত্র ও নগদ এক লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। বিয়ের পর থেকে নরেন জয়ধর তার ভাই নারায়ণ জয়ধর ও বৌদি কবিতার সহায়তায় এবং প্ররোচনায় অনিমার কাছে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা যৌতুকের দাবীতে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলো।

দাবীকৃত ওই যৌতুকের টাকা দিতে অনিমা অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন করেও তা আদায় করতে না পেরে গত এক বছর পূর্বে নরেন জয়ধর ঢাকায় চলে যায় এবং সেখানে অন্য একটি মেয়ে বিয়ে করে। এর কিছুদিন পরে আবারও বাড়িতে ফিরে এসে সে স্ত্রী অনিমার কাছে ১০ কাঠা জমি ও নগদ অর্ধ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। এর মধ্যে অনিমা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূনরায় যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করার এক পর্যায়ে অনিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রাতে লাশ গুম করার জন্য আসামীরা স্থানীয় মরিচবুনিয়া বাজার এলাকা অতিক্রমকালে এলাকাবাসী তাদের আটক করে উত্তমমধ্যম দিয়ে পুলিশে খবর দেন। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার ও তিন আসামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন হত্যা মামলা নেওয়ার পাশাপাশি অনিমার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ বরিশাল মর্গে ও আসামীদের কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *