
মোঃ আনোয়ার হোসেন,
ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি ঝিনাইদহ শহরের মুরারীদহ গ্রামের কুড়ের মাঠের কলাবাগানে লাশ পাওয়া যায় শিশু বিল্লাল হোসেনের। ৩য় শ্রেণির ছাত্র বিল্লাল মুরারীদহ খালপাড়া গ্রামের মোঃ শহিদুল ইসলাম শেখের ছেলে। ঘটনার দুই বছর পার হতে চললেও এখনও উদ্ধার হয়নি হত্যার মোটিভ। ঘাতকরা চিহ্নিত হলেও কি কারণে বিল্লালকে হত্যা করা হয় সে সম্পর্কে এখনো তদন্তকারী সংস্থাগুলো রয়েছে অন্ধকারে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে খেলা করার জন্য বের হয় শিশু বিল্লাল। ৪ জানুয়ারি বেলা ১১ টার দিকে প্রতিবেশি তাসলিমা নামে এক নারী কলাবাগানে বিল্লাল হোসেনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবারকে খবর দেয়। এজাহারে বাদী শহিদুল ইসলাম শেখ উল্লেখ করেন, এজাহারভুক্ত আসামি মিজানুর রহমানের ওই কলার ক্ষেত থেকে মোচা কাটার অপরাধে শহিদুল ইসলাম শেখের ভাতিজা মেহেদি হাসানকে মারপিঠ করে মিজানুর রহমান। এ নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করে মাতব্বররা। এই শালিসের কারণে মিজানুর রহমান শহিদুল ইসলাম শেখের পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আসামী মিজানুর বাদীর পরিবারকে দেখে নেওয়ার হুমকীও দেয়। সেই সুত্র ধরেই শিশু বিল্লালকে নির্মমভাবে হত্যা করে প্রতিশোধ নেয় মিজানুর ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে ৩০২, ২০১ ও ৩২ নং (পেনালকোর্ট-১৮৬০) ধারায় মামলা করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রবীর কুমার বিশ্বাস ৫ তারিখে আসামি মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করেন। বাদীর দাবী হত্যা ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান মুরারীদহ গ্রামের হাতেম জোয়ার্দারের ছেলে শরিফুল ইসলাম বায়ো, রবিউল ইসলাম, জনাব আলী বিশ্বাসের ছেলে ফজলু বিশ্বাস ও নকাতুল্লার ছেলে তোফাজ্জেল জোয়ার্দার। গত ১৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর বিজ্ঞ আমলি আদালতে স্মারক নং-৪৮২ এর মাধ্যমে একটি পিটিশন আবেদন করেন হত্যার শিকার বিল্লাল হোসেনের মা রাজিয়া খাতুন। পিটিশনের মাধ্যমে রাজিয়া খাতুন দাবি করেন সন্তান মারা যাওয়ার পর তার শোকাহত স্বামীকে না পড়িয়েই আসামি পক্ষের লোকজন সব আসামির নাম উল্যেখ না করে মাত্র একজন আসামির নাম ও অজ্ঞাত নামে স্বাক্ষর করিয়ে জমা দেন। বিজ্ঞ আদালত এই মামলায় এই ৫ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তদন্ত শুরু করতে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমানের রিমান্ডে বলেন ভয়ের কারণে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে ছিলেন। মামলার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা সেই আলোকেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ৩ মাসের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আসেন আসামী মিজানুর রহমান। মামলার অপর আসামিরা পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার হলেও শরিফুল ইসলাম ছাড়া বাকি সব আসামি বাইরেই রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পিবিআই পরিদর্শক আব্দুর রব। প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হলেও কি কারণে শিশু বিল্লালকে হত্যা করা হয় সে তথ্য আজও রয়েছে অজানা। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্টে শিশু বিল্লালের অন্ডকোষ, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।