দোহারে চলছে কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব

কাজী জোবায়ের আহমেদ.
ঢাকার দোহার উপজেলা মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমির (টপ সয়েল)। চলছে ভেকু মেশিন বসিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করার মহোৎসব। আর এতে কৃষি ফসলের উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা রয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। পাশাপাশি নষ্ট করছেন ৩ থেকে ৪ বিঘা কৃষি জমি ও হুমকির মুখে রয়েছে এলজিইডি’র সড়ক।

জানা যায়, এ সব জমিতে প্রতি মৌসুমে ধান, সরিষা, রসুন ও শীতকালীন সবজি ব্যাপক ভাবে উৎপাদন হয়। কিন্তু বর্তমানে কয়েকটি মাহেন্দ্রা গাড়ি ও ১টি ট্রাক্টরের মাধ্যমে এসব মাটি যাচ্ছে পাশে থাকা পিবিসি নামক একটি ইট ভাটায়। আর এভাবেই উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে চলছে বেশ কয়েকটি বেকুসহ ড্রেজার। আর এসব বন্ধে প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা গুঞ্জন।

রবিবার (২৬ মার্চ) সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, দোহার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডে ফসলী জমিতে ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছেন স্থানীয় লিটন দেওয়ান নামে এক লোক। এছাড়াও মাহমুদপুর ইউনিয়নে মাইলের পর মাইল ড্রেজার পাইপ সংযোগ দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে উজাড় করা হচ্ছে। ভেকু দিয়ে জমির টপ সয়েল ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে ফসলি জমিগুলোকে ১০ থেকে ২০ ফুট গভীর গর্ত করা হচ্ছে। এতে আশ-পাশের ফসলী জমি ভেঙ্গে তৈরি হচ্ছে জলাশয়। এ ভাবে ফসলী জমির মাটি বিক্রি হতে থাকলে ফসল উৎপাদনে হ্রাসসহ পদ্মা নদীর ভাঙ্গন ঠেকানো সম্ভব হবে না বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। এছাড়া এই স্থানে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার দায়ে কয়েক মাস আগে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোবাশ্বের আলম একটি বেকু জব্দ করেন।

মাহমুদপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ মীর আলী জানান, আমাদের এই চক থেকে প্রতিনিয়তই মাটি কেটে বিক্রি করছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। কিছুদনি আগে প্রশাসন একটি বেকু জব্দ করার পর কিছু দিন বন্ধ ছিল মাটি কাটা। কিন্তু এখন আবার পুনরায় সব কিছু মেনেজ করে চালু করেছে মাটি কেটে বিক্রি করার উৎসব।

তিনি আরও বলেন, এই ইউনিয়নে প্রতিনিয়তই দেদারসে চলছে ড্রেজার, ভেকু ও মাটিবাহী মাহেন্দ্রা ও ট্রাক্টর। আর এতে আমাদের বাড়ির সামনে থাকা রাস্তায় মাটি পরে ধুলোয় পরিনত হচ্ছে। আর বৃষ্টি হলে এ ধুলাবালি থেকে সম্পূর্ণ পাকা রাস্তা কাঁদায় পরিনত হয়। আর এতে করে আমাদের এখানে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্রছাত্রীদের চলাচলে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। আমরা বাড়ি থেকে অজু করে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারি না রাস্তার এই কাঁদার জন্য। আর এর মূল কারণ হচ্ছে পাশে থাক পিবিসি নামক একটি ইট ভাটা। যদি এই ইট ভাটা বন্ধ না হয় তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।

অভিযুক্ত লিটন দেওয়ানের বলেন, আমরা কামাল মাস্টার এর কাছে থেকে টাকা দিয়ে মাটি কিনে নিয়েছি। তার জমি উঁচুনিচু ছিল। তাই আমরা তার জমি সমান করে দেওয়ার জন্য বেকু দিয়ে মাটি কাটতেছি।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোবাশ্বের আলম বলেন, এর আগেও আমার ওই স্থান থেকে একটি বেকু জব্দ করেছিলাম। প্রশাসন আবারও দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে এ কাজের সাথে যারা যারা জড়িতে আছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *